পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তর মুসলিম দেশ হল আমাদের এই বাংলাদেশ। এদেশের মুসলমানরা শত শত বছর ধরে কুরআন-সুন্নাহ ও ইসলামিক কালচার অনুযায়ী জীবন যাপন করে আসছে। পোশাকের ক্ষেত্রেও এদেশের মুসলমানরা ইসলামি পোশাক পরতেই বেশি পছন্দ করেন।
তারপরও পাশ্চাত্যের গোলাম হিসেবে পরিচিত কিছু নামধারী মুসলমান এদেশের মুসলমানদের মধ্যে পাশ্চাত্যের নোংরা সংস্কৃতি ঢোকানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে। নেকাব ও হিজাবধারী স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ও নারীদেরকে তারা ধর্মান্ধ বলে গালি দিয়ে থাকে। নেকাব ও হিজাব পরার কারণে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ছাত্রীদেরকে বের করে দেয়ার ঘটনাও ঘটছে।
আধুনিকতার নামে উলঙ্গ সংস্কৃতির অনুসারীরা প্রায় সময়ই নেকাব ও হিজাব নিয়ে কটাক্ষ করে থাকে। টেলিভিশনের টকশোতে তারা হিজারধারী নারীদেরকে নিয়ে নানা রকম বাজে মন্তব্য করে থাকে।
লক্ষণীয় বিষয় হলো- এখন রাষ্ট্রের অভিভাবক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেও নেকাবধারী নারীদেরকে নিয়ে কটাক্ষ শুরু করেছেন। রোববার গণভবনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী খুব তাচ্ছিল্যের সঙ্গে হাতে পায়ে মোজা পরা ও নেকাব দিয়ে চোখ-মুখ ঢেকে রাখা নারীদেরকে কটাক্ষ করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনের শেষের দিকে এসএ টিভির সিইও ও সারাবাংলা ডটনেটের সম্পাদক ইসতিয়াক রেজা প্রশ্ন করেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে আমাদের নারীদের বিরুদ্ধে কিছু মৌলবাদী গোষ্ঠী ইউটিউব ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আস্তিক-নাস্তিক বিতর্ক সৃষ্টি করছে, ধর্মীয় সংঘাত ও সহিংসতা সৃষ্টি করছে। এদের ব্যাপারে আপনি কি ব্যবস্থা নেবেন এবং রাষ্ট্র কি ব্যবস্থা নিতে পারে?
জবাবে প্রধানমন্ত্রী অনেক বয়ান করেছেন। হযরত খাদিজা ও আয়েশার জীবন কাহিনী বর্ণনা করেছেন। তারা নারী হয়েও যুদ্ধ করেছেন। ওই সময় নারীরা অনেক ক্ষমতাধর ছিলেন। এরপর তিনি বাংলাদেশে নারীদের ক্ষমতায়নের বয়ান করলেন। বললেন- আমরা নারীদেরকে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। এখন পাইলট আছে আমার নারী, আর্মি অফিসার আছে আমার নারী, মেজর আছে আমার নারী। আমি নারীদেরকে সবখানে তুলে নিয়ে আসছি। এটাই তাদের জবাব।
এরপর কয়েক সেকেন্ড বিরতির পর ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দাঁড়ালেন প্রশ্ন করতে। ওই সময় প্রধানমন্ত্রী নারীদের প্রসঙ্গে আবার বললেন, ‘হাত মোজা, পা মোজা, নাক-চোখ ঢাইক্কা এটা কি? জীবন্ত টেন্ট (Tent- তাঁবু) হয়ে ঘুরে বেড়ানো এটারতো কোনো মানে হয় না।’
সচেতন মানুষও মনে করছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখানে সরাসরি নেকাব ও হিজাবধারী নারীদেরকে অপমান করেছেন। ইসলামি বিধান অনুযায়ী পোশাক পরার অধিকার একজন মুসলিম নারীর আছে। কিন্তু শেখ হাসিনা একটি মুসলিম দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়ে হাত মোজা, পা মোজা ও নেকাব পরিধান করে নাক-চোখ ঢেকে রাখাকে তাচ্ছিল্য করতে পারেন না। এর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এদেশের মুসলিম নারীদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছেন।